“নিয়মিত ওয়াজিফার আমল করলে আল্লাহর দয়া পেতে সুবিধা হবে”
মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলা বলেন, আশেকে রাসূলেরা! নিয়মিত তরীকার ওয়াজিফাটা আমল করেন। এই ওয়াজিফা আপনাকে আল্লাহর দয়া পেতে সাহায্য করবে। তিনি গত ১১ জানুয়ারী, শুক্রবার রাজধানী ঢাকার মতিঝিলের আরামবাগস্থ বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফে সাপ্তাহিক আশেকে রাসূল (সঃ) মাহফিলে সমবেত হাজার হাজার আশেকে রাসূলের উদ্দেশ্যে বাণী মোবারক দিচ্ছিলেন।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা বলেন, হযরত আদম (আঃ) থেকে এই পর্যন্ত পৃথিবীতে যত মানুষ এসেছে, যত মুনি, ঋষি, নবী-রাসূল, গাউস কুতুব এসেছেন। সবাই আবার পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। সবাই চলে যাবে এটাই আল্লাহর বিধান। এই দুনিয়াটা আমাদের জন্য একটা পরীক্ষা কেন্দ্র। আল্লাহ্ এখানে আমাদের পাঠিয়ে ঈমানের পরীক্ষা নেন। পৃথিবীতে পাঠিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় ফেলে পরীক্ষা নেন। পাশ করলে মুমিন, আর ফেল করলে লাইনচ্যুত হয়ে যায়। যত নবী রাসূল, অলী-আল্লাহ্ এসেছেন, তাঁদেরও পরীক্ষা হয়েছে। তাঁদের অনুসারীদেরকেও পরীক্ষায় পড়তে হয়েছে। ঐ পরীক্ষায় যারা টিকতে পেরেছে, তারা মুমিন হয়ে প্রমোশন পেয়েছেন। আর যারা টিকতে পারেনি, তারা আবার ফেঁসে গেছে।
তিনি বলেন, মৃত্যু কখনো ফোন করে বা টেলিগ্রাম করে আসে না। নির্দিষ্ট সময় হলে দেখবেন গ্রাস করে ফেলেছে। মানুষের শিক্ষা দীক্ষা কোন কিছুই মৃত্যুর সময় সাহায্য করতে পারে না। যদি কেউ ঈমানী পরীক্ষায় পাশ করতে পারে, তখন সে আল্লাহর দয়া পায়, রাসূলের দয়া পায়, ঈমানের সাথে জগত থেকে বিদায় নিতে পারে। আমরা জাকেরদের যে শিক্ষা দিচ্ছি, সেটা হলো- সে কিভাবে ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করবে। এই কারণে ক্বালবে জ্বিকিরের শিক্ষা দেই। সমাজের হুজুরেরা তো বিশ্বাসই করে না যে, মানুষের ক্বালবে জ্বিকির হতে পারে। কিন্তু আপনারা যারা তরীকা নিয়েছেন, তারা বুঝতে পারেন। এখন দেখেন, আপনাদের সাথে হুজুরদের কত পার্থক্য। অথচ তারা নাকি নায়েবে রাসূল। পবিত্র কুরআনে অতীতের নবী-রাসূলদের জীবনে কি কি ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো বর্ণনা করা হয়েছে। তাঁরা যেসমস্ত বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন, সেগুলো যদি আপনারা জানেন, তা আপনাদের সাহায্য করবে। আপনারা বুঝতে পারবেন যে, তারা তখন ভালো অবস্থায় ছিলেন না। যাঁরা ইসলাম গ্রহণ করেছে, তাঁরা চরমভাবে নির্যাতিত হয়েছে।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা বলেন, হযরত রাসূল (সঃ)-এর পরিবারবর্গ সারা জগতবাসীর কাছে শ্রদ্ধার পাত্র। কিন্তু এরপরেও হযরত রাসূল (সঃ)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হাসান (রাঃ) ও ইমাম হোসাইন (রাঃ)-কে নির্মমভাবে শহীদ করা হয়েছে। এইভাবে অতীতের নবী, রাসূলদেরকে চরমভাবে নির্যাতন করে শহীদ করা হয়েছে। আজকে বিশ্বের সব দেশের মুসলমানরা গাউসে পাক হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)-কে বড়পীর বলে শ্রদ্ধা করে, সম্মানের সাথে তাঁর নাম নেয়। অথচ তিনিও চরমভাবে নির্যাতিত, নিষ্পোষিত হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আশেকে রাসূলেরা! এতে আপনাদের দুঃখ পাবার কিছুই নেই। আপনি যখন আল্লাহর কথা বলবেন, তখন আপনার উপর ঝড় আসবেই। কোন নবী- কোন রাসূল স্বাভাবিকভাবে জগত থেকে বিদায় হয়নি। কুল কায়েনাতের রহমত রাহমাতাল্লিল আলামীন রাতের আঁধারে, মক্কা হতে মদীনায় হিজরত করেছিলেন। মদীনায় যাওয়ার পরেও ঐ জালেমরা রাসূল (সঃ)-এর উপরে আক্রমণ করেছে। বদর, ওহুদ যুদ্ধে শত শত সাহাবীকে হত্যা করেছে। এখনতো কিছু হলেই আমরা বলি, এটা একটা কারামত দেখিয়ে ঠিক করে দিতে পারে না? হযরত রাসূল (সঃ) তো কারামত দেখিয়ে ঠিক করেন নি। আল্লাহর পক্ষ থেকে যাদেরকে ঈমানদার করবেন, তাদেরকে হয়তো রাসূল (সঃ) সাহায্য করেছেন। সুতরাং মহব্বতের সাথে তরীকার কাজ করেন, আল্লাহর দয়া পেলে ঈমানের উপর কায়েম থাকতে পারবেন। আল্লাহর দয়া ছাড়া কোন মানুষই ঈমানদার হতে পারে না। মনোযোগ দিয়ে তরীকার কাজ করেন, আল্লাহ্ দয়া করে সাহায্য করবেন।
সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান শুরু হলে- প্রথমে আশেকে রাসূলদের মোহাম্মদী ইসলামের ওয়াজিফার তালিম দেওয়া হয়। দুপুর সোয়া ১২টায় জু’মার নামাজের আজানের পর মোহাম্মদী ইসলামের মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বেলা দেড়টায় জু’মার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা মাহফিলে সমবেত হাজার হাজার আশেকে রাসূলদের উদ্দেশ্যে বাণী মোবারক প্রদান করে মাহফিলের আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন। এরপর তিনি নবাগতদের সবক দেন। মাহফিল শেষে সবাই তাবারুক খেয়ে বিদায় নেন।
2 comments:
মুল্যবান বানী মুবারক,,, আমিন
মহা সত্যের বানীমোবার,,, আমিন।
Post a Comment