Saturday, December 14, 2019

পবিত্র জন্মবার্ষিকীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সূফী সম্রাট


“মায়ের উদরে চার মাস বয়সে মানুষের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করা হয়”

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্বির্য্যরে মধ্য দিয়ে গত ১৪ই ডিসেম্বর, শুক্রবার মহান সংস্করক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলার ৬৯তম শুভ জন্মদিন দেশে-বিদেশে নানাবিদ কর্মসূচীর মাধ্যমে উদযাপন করা হয়। এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানী ঢাকার মতিঝিলের বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফে আয়োজন করা হয় এক বিশেষ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। সকাল হতে বাদ জুম্মা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাণী মোবারক প্রদানকালে সূফী সম্রাট হযরত দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলা বলেন, আজ থেকে ঊনসত্তর বছর পূর্বে আমার জন্ম হয়েছে। আল্লাহর রাসূলের পক্ষ থেকে জানা যায়, আমরা যখন চার মাস বয়সে মায়ের উদরে থাকি, তখনই আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন ফেরেশতা পাঠানো হয় তার ভাগ্য লিখার জন্য। ফেরেশতা এসে তার ভাগ্য লিপিবদ্ধ করে দেয়। কতদিন সে দুনিয়াতে বেঁচে থাকবে; সে বেশী জ্ঞানী হবে, না কম জ্ঞানী হবে- আল্লাহর পক্ষ থেকে লিখে দেয়া হয়। এই হিসেবে যদি আমরা পিছনের দিকে তাকাই দেখতে পাবো- আমাদের হায়াতে জিন্দেগী হতে ঊনসত্তরটি বছর বিদায় হয়ে গেছে। আর কতদিন রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে তাঁর এই জগতে থাকার সুযোগ দিবেন, তিনিই ভাল জানেন।

সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা বলেন, সবাই চেষ্টা করেন, যেন আল্লাহতে পূর্ণ ঈমানদার হতে পারেন। মুসলিম বিশ্বে দেখেন, মুসলমানদের মধ্যে ফেতনা অনেক। হযরত রাসূল (সঃ) বলেন, অন্যান্য নবীদের মধ্যে ছিল ৭২ ফেরকা বা দল। আর আমার উম্মতের মধ্যে ৭৩ ফেরকা বা দল। এর মধ্যে ৭২ ফেরকা জাহান্নামী। আর একটা দল বেহেশতী। সুতরাং আমাদের ঠিকানা খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের আল্লাহর পরিচয় জানতে হবে, রাসূলের পরিচয় জানতে হবে।
তিনি বলেন, হযরত রাসূল (সঃ) ফরমান, মৃত্যুর সময় আমাদেরকে তিনটা প্রশ্ন করা হবে- মার রাব্বুকা? ওয়ামা দ্বীনুকা? ওয়ামান নাবীয়্যুকা? অর্থাৎ- তোমার প্রভু কে? তোমার ধর্ম কি? তোমার নবী কে? আপনি যদি প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেন, তবে ঈমান নিয়ে কবরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। আর জবাব দিতে না পারলে তো আপনি ফেল। সুতরাং দুনিয়াতে থেকেই আল্লাহকে পেতে হবে এবং আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করতে হবে। পৃথিবীতে যত নবী, রাসূল ও অলী-আল্লাহ্ এসেছেন, তাঁরা সবাই সাধনা করে আল্লাহকে পেয়েছেন।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা বলেন, আমাদের ধর্ম সম্বন্ধে সঠিক ধারণা নেই। আমরা মনে করি- মাদ্রাসায় লেখাপড়া করলে নায়েবে রাসূল হওয়া যায়। নায়েবে রাসূল হতে হলে মাদ্রাসায় পড়তে হয়। আমি মাদ্রাসায় পড়ে দেখেছি, কতটুকু নায়েবে রাসূল হয়েছি। পরে মোর্শেদের দরবারে ১২ বছর গোলামী করে ঈমানদার হতে পেরেছি। সুতরাং নবুয়তের যুগে মানুষ নবী-রাসূলের সাহচর্যে গিয়ে যেমন আল্লাহকে পেয়েছেন, তেমনি এ যুগে নায়েবে রাসূল অলী-আল্লাহদের সাহচর্যে গিয়ে গোলামী করে নিজের ভিতরে দোষ-ক্রুটি দূর করে আল্লাহকে পেতে হবে। আল্লাহকে যদি পান, তবে আপনি মুমেন। হাদীস শরীফে বলা হয়েছে, “আসসালাতু মিরাজুল মু’মিনীন”- নামাজ হলো মুমিনদের মে’রাজ। যিনি মু’মেন, নামাজে তাঁর সাথে আল্লাহর দীদার হয়। তিনি আল্লাহকে দেখে সেজদা করতে পারেন।
তিনি বলেন, আল্লাহকে দেখার কথা বললে- এক শ্রেণীর লোকেরা বলেন, মুসা (আঃ) নবী হয়েও তো আল্লাহকে দেখে নাই। যদি তাকে প্রশ্ন করেন, আপনি কি মুসা (আঃ)-এর উম্মত? সকল নবীরাই আল্লাহকে দেখেছেন। আমরা তো এখন আল্লাহকে দেখতেও চাই না। আল্লাহকে দেখলে যদি ঈমান চলে যায়, তবে কাকে দেখলে ঈমানদার হবে? শয়তানকে দেখলে কি মানুষ ঈমানদার হয়? সুতরাং সাধনা করে আপনার মালিক আল্লাহকে চিনেন। আল্লাহকে না চিনলে প্রতিনিধিত্ব করা যায় না। আমরা আগে জানতাম, আল্লাহ্ নিরাকার। কিন্তু সাধনার জীবনে এসে রাব্বুল আলামীনের অশেষ দয়ায় যখন রাব্বুল আলামীনের দেখার খোশ নছিব হয়েছে, কথা বলার সুযোগ হয়েছে, তখন বুঝতে পেরেছি, আল্লাহ্ নিরাকার নয়। এরপরে চিন্তা করলাম, আল্লাহর এই মহা সত্যটা প্রকাশ করতে হবে। দীর্ঘ সাধনার পর আল্লাহর বাণী এবং হযরত রাসূল (সঃ)-এর বাণী দিয়ে আমি আট খণ্ডে ‘তাফসীরে সূফী সম্রাট দেওয়ানবাগী’ লিখেছি। আপনারা তাফসীর পড়ে দেখেন, আমরা পবিত্র কোরআন ও হাদীসের বাইরে একটা কথাও লিখি নাই। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো- আমরা ত্রিশ পাড়া কোরআনকে তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখেছি, আল্লাহ্ নিরাকার এমন একটা আয়াতও পাই নাই। আমরা মস্ত বড় একটা ভুলে ছিলাম। রাব্বুল আলামীনের দয়ায় আমাদের এই ভুলটা সংশোধন হয়েছে। আপনারা তাফসীর পড়ে দেখেন। সবগুলো কোরআনের আয়াত আমরা সাজিয়ে লিখে দিয়েছি। আল্লাহর বাণী, রাসূলের বর্ণনা দিয়ে তাফসীর সমাপ্ত করেছি।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা বলেন, আল্লাহ্ আমাদের মালিক, রাসূল আমাদের সাফায়েতকারী। অথচ তাঁদের সম্বন্ধে আমাদের সঠিক ধারণা নেই। আমরা মনে করি- আল্লাহ্ নিরাকার, আর রাসূল (সঃ) গরীব ছিলেন। হযরত রাসূল (সঃ)-এর দাদা ছিলেন মক্কার শাসনকর্তা, আর হযরত রাসূল (সঃ) ছিলেন মদীনার শাসনকর্তা। মদীনার শাসন কর্তা কি সত্তর তালি জামা পড়ে সিংহাসনে বসতেন? এসব উল্টা-পাল্টা ধারনা সৃষ্টি হয়েছে হযরত রাসূল (সঃ) সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান না থাকার কারনে। সুতরাং আমাদের সবার আল্লাহ্ ও হযরত রাসূল (সঃ) সম্বন্ধে সঠিক ধারণা থাকা উচিৎ। আপনারা মনোযোগ দিয়ে সাধনা করেন যেন আল্লাহ্ ও হযরত রাসূল (সঃ)-কে পেতে পারেন।
সকাল ৮টায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত ও মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অতঃপর স্বাগত ভাষন দেন দেওয়ানবাগ শরীফের মহাসচিব ডক্টর সৈয়দ এম. সাঈদুর রহমান আল মাহবুবী। এরপর হামদ, নাতে রাসূল ও শানে মোর্শেদ পরিবেশিত হয়। সকাল ১১টায় সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা পবিত্র জন্মদিন উপলক্ষে একটি বিশাল বড় কেক কাটেন, ‘সূফী সম্রাট’ নামক স্মরণিকা মোড়ক উন্মোচন করেন এবং দেওয়ানবাগ শরীফের একটি নতুন সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ‘দোস্তাম’-এর উদ্বোধন করেন। এরপর বাবে রহমত ভবনের ১০ তলার ছাদ থেকে সূফী সম্রাটের পবিত্র জন্মদিনের বেলুন উড়ানো হয়। এরপর দুপুর সোয়া ১২টায় জুম্মার নামাজের আজানের পর জ্যেষ্ঠ সাহেবজাদা ইমাম ড. সৈয়দ এ.এফ.এম. নূর-এ-খোদা, মেজো সাহেবজাদা ইমাম ড. আরসাম কুদরত-এ-খোদা ও ছোট সাহেবজাদা ইমাম ড. সৈয়দ এ.এফ.এম. মঞ্জুর-এ-খোদা বক্তব্য রাখেন। বেলা পৌঁনে দুইটায় আশেকে রাসূল ও মুক্তিকামী মানুষ জুম্মার নামাজ আদায় করেন। এরপর সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা মঞ্চে তশরীফ নিলে সমস্ত আশেকে রাসূলদের পক্ষ থেকে তাঁকে পুষ্পমাল্য প্রদান করেন ইমাম ড. সৈয়দ এ.এফ.এম. নূর-এ-খোদা। অতঃপর তিনি বাণী মোবারক দেয়ার পর সবার ইহকালের শান্তি ও পরকালের মুক্তি কামনা করে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সেজো সাহেবজাদা ইমাম ড. সৈয়দ এ.এফ.এম. ফজল-এ-খোদা, জ্যেষ্ঠ দৌহিত্র ডক্টর সৈয়দ এ.এফ.এম. বরকত-এ-খোদা ও সৈয়দ এ.এফ.এম. রহমত-এ-খোদাসহ দেশের গণ্য মান্য ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ। সম্মেলনে আগত মেহমানদের বিরিয়ানীর প্যাকেট ও কেক দেয়া হয়।

Saturday, December 7, 2019

বাবে রহমতের সাপ্তাহিক মাহফিলে সূফী সম্রাট


“মহামানবদের জন্মদিন, ওফাতের দিন ও পুনরুত্থানের দিন মানুষের মুক্তির দিন”

মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেব্লা বলেন, মহামানবদের জন্মদিন, ওফাতের দিন ও পুনরুত্থানের দিন- এই তিনটা দিনে আল্লাহ্ মানুষের মুক্তির ব্যবস্থা করে থাকেন। তিনি গত ৭ই ডিসেম্বর শুক্রবার রাজধানী ঢাকার মতিঝিলের আরামবাগস্থ বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফে অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক আশেকে রাসূল (সঃ) মাহ্ফিলে সমবেত হাজার হাজার আশেকে রাসূলের উদ্দেশ্যে বাণী মোবারক দিচ্ছিলেন।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা বলেন, আল্লাহ্ নবী-রাসূলদের মোজেজা দিয়ে আর অলী-আল্লাহদের কারামত দিয়ে সাহায্য করেন। সমাজের অনেকের ধারণা, যাঁরা অলী-আল্লাহ্, তাঁদের কি আবার অলৌকিকত্ব থাকে? আসলে সেটা আল্লাহর পক্ষ থেকেই ঘটানো হয়। নবুয়তের যুগে যাঁরা নবী-রাসূল হয়ে জগতে এসেছিলেন, আল্লাহ্ তাঁদেরকে অলৌকিক মোজেজা দিয়ে সাহায্য করেছেন। হযরত মুসা (আঃ)-কে আল্লাহ্ নয়টা মোজেজা দিয়েছিলেন। আমাদের রাসূল (সঃ)-এরও অসংখ্য মোজেজা ছিল। সমস্যা হলো- উমাইয়াদের শাসনামলে হযরত রাসূল (সঃ)-এর মোজেজা ধরে রাখার মত লোক তেমন ছিল না।
তিনি বলেন, একদিন আবু জাহেল বলেছিল, ভাতিজা। তুমি যদি এই চাঁদটাকে দ্বিখন্ডিত করতে পার, তাহলে আমি তোমাকে রাসূল স্বীকার করবো এবং ইসলাম গ্রহণ করবো। কারণ আবু জাহেলের ধারণা ছিল, এটাতো কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তখন হযরত রাসূল (সঃ) বললেন, ঠিক আছে। তিনি তাঁর শাহাদাত আঙ্গুলী মোবারক দিয়ে ইশারা দিলেন। সাথে সাথে চাঁদ দুই টুকরা হয়ে যায়। উপস্থিত যারা ছিল তারা এঘটনা দেখেছে। আবু জাহেল বলেছিল, মোহাম্মদ! তুমি শেষ পর্যন্ত চাঁদের মাঝে যাদু লাগিয়ে দিলে। এরপরে সে বলে যায়, তার আর ইসলাম গ্রহণ করা হলো না। আসলে যাদের ভাগ্যে হেদায়েত নেই, তাদের এমনই হয়। হযরত রাসূল (সঃ) আরো অসংখ্য অলৌকিক মোজেজা দেখিয়ে ছিলেন। চৌদ্দশত বছর পরে জন্ম নিয়ে আমাদের দেশে এখনো আশেকে রাসূলেরা হযরত রাসূল (ষঃ)-এর মোজেজা দেখতে পায়।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা বলেন, আমার মোর্শেদের দরবারে আমরা একদিন আসরের নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলাম। এমন সময় হাওলাদার কান্দির ইউছুফ মুন্সী নামে একজন লোক আমার মোর্শেদকে বললেন, বাবাজান! আমার স্ত্রী মারা গেছে। দয়া করে জানাজার নামাজ পড়ার জন্য দরবার থেকে একজন হুজুর পাঠান। বাবাজান আমাকে বললেন, মাহবুব মিয়া! একজন মাওলানা পাঠিয়ে দেন। তাড়াহুড়ার কিছু নেই, মাগরিবের পরে গেলেই চলবে। দরবার শরীফে মহসীন কারী নামে একজন ছিলো। আমি তাকে বললাম, আপনি ঐ গ্রামে গিয়ে তার জানাজার নামাজ পড়িয়ে আসেন। সে জানতে চায়, কখন যেতে হবে? আমি বললাম, এশার নামাজের সময় গেলেই চলবে। মহসীন কারী এশার নামাজের সময় রওয়ানা হলেন- ইউসুফ মুন্সীর বাড়ীর উদ্দেশ্যে। সে ইউসুফ মুন্সীর বাড়ীর কাছে গিয়ে সেখানে মারা যাওয়ার কোন আলামত পায় নাই। একটা মানুষ মারা গেলে সেখানে মানুষ কান্নাকাটি করে। কিন্তু সেই বাড়ীতে এরকম কোন লক্ষন দেখা যায় নাই। মহসীন কারী ভাবলো, আমি কি কোন ভুল সংবাদে এসেছি? তারপরও সে বাড়ীতে প্রবেশ করে দেখে, উঠানের মধ্যে সবাই বসে গল্প করছে। কারী সাহেব যার মৃত্যুর সংবাদে গেলেন, সেই মহিলাও উঠানে বসে অন্যদের সাথে গল্প করছে। এদিকে মায়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ইউসুফ মুন্সীর মেয়ে পার্শ্ববর্তী পিয়াজখালীর শ্বশুরবাড়ী থেকে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ীতে আসে। এসে দেখে তার মা সবার সাথে বসে গল্প করছে। এতে মহসীন কারী হতবাক হয়ে জিজ্ঞেসা করে, আসলে ঘটনা কি ঘটেছে? তখন ইউসুফ মুন্সীর স্ত্রী বললো, আমি তো অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম। এরপর কি হয়েছে জানি না। শুধু দেখেছি, শাহ্ চন্দ্রপুরী এসে আমাকে ডাক দিলেন, এই তুমি উঠো। এরপর আমার জ্ঞান ফিরে আসে। আমি উঠলাম। মহসীন কারী রাত ১১/১২ টার সময় দরবার শরীফে ফিরে এসে এই মৃত মহিলা পুনরায় জীবিত হয়ে উঠার কথা জানালেন। এরকম বহু ঘটনা আমি দেখেছি।
তিনি বলেন, আশেকে রাসূলেরা! অলী-আল্লাহদের কারামত সত্য। তাঁদের কারামত বিশ্বাস করতে হয়। আগেতো আমিও বিশ্বাস করতাম না। কিন্তু চোখের সামনে ঘটলে বিশ্বাস না করে পারা যায় না। কয়েকদিন আগে আমাদের একজন জাকেরের মেয়েকে চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়া নিয়ে যায়। সেখানকার ডাক্তাররা বলে, তার আর বেশী সময় নেই। আপনারা তাড়াতাড়ি বাংলাদেশে নিয়ে যান। ডাক্তারের কথা শুনে মেয়ের করে মা-বাবা কান্নাকাটি বিমানে ঢাকায় এসে সরাসরি আমার দরবার শরীফে এসে পৌঁছায়। মেয়ের বাবা আমার কাছে এসে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো। আমি জানতে চাই, কি হয়েছে? তখন বললো, তার ব্লাড ক্যান্সার। ইন্ডিয়ার ডাক্তাররা বলেছে, তার আর বেশী সময় নেই। আমরা তখন তাকে নিয়ে চলে এসেছি। আমি মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার কি হয়েছে? সে বলে, আমার ক্যান্সার। তারপর বললো, আমি এক সাপ্তাহ যাবৎ কিছুই খেতে পারি না- এমনকি পানিও না। আমি জানতে চাই, তোমার কি ক্ষুধা লাগে? সে বলে, ক্ষুধাতো লাগে, কিন্তু আমি খেতে পারি না। আমি তার বাবাকে বললাম, আত্মার বাণী পত্রিকা চুবানো পানি ওকে খাওয়ান। পানি খাওয়ার পর সে খাবার খেতে চায়। আমি তাকে তিন তলায় আমাদের বাসার ভিতরে পাঠাই। সেখানে মেয়েটি পেটভরে খাবার খেলো। এরপর সে একদম সুস্থ্য, কোন অসুখ নেই। এরপর খুশিতে বাড়ী চলে যায়। আল্লাহ্র রহমতে মেয়েটি সুস্থ হয়ে গেছে। আমি মেয়েটির নতুন নাম রেখে দিলাম- নূরজাহান। সুতরাং আল্লাহ্ চাইলে কি না হয়। আপনারা বিশ্বাস রাখেন, বিশ্বাসের নাম ঈমান। নিয়মিত দরবার শরীফে আসবেন। তরকিার আমল করবেন। এতেই আল্লাহর সাহায্য পাবেন।
সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান শুরু হলে- প্রথমে আশেকে রাসূলদের মোহাম্মদী ইসলামের ওয়াজিফার তালিম দেওয়া হয়। দুপুর সোয়া ১২টায় জু’মার নামাজের আজানের পর মোহাম্মদী ইসলামের মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অতঃপর বেলা দেড়টায় জু’মার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা মঞ্চে তশরীফ নিয়ে মাহফিলে সমবেত হাজার হাজার আশেকে রাসূলদের উদ্দেশ্যে তিনি বাণী মোবারক প্রদান করে মাহফিলের আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন। এরপর তিনি নবাগতদের সবক দেন। মাহফিল শেষে সবাই তাবারুক খেয়ে বিদায় নেন।