Saturday, February 16, 2019

বাবে রহমতের সাপ্তাহিক মাহফিলে সূফী সম্রাট


মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষা অনুশীলনের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব

মহান সংস্কারক মোহাম্মদী ইসলামের পুনর্জীবনদানকারী সূফী সম্রাট হযরত সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা দেওয়ানবাগী (মাঃ আঃ) হুজুর কেবলা বলেন, মোহাম্মদী ইসলাম কিভাবে বাস্তব জীবনে শান্তি এনে দিতে পারে, এবারের বিশ্ব আশেকে রাসূল (সঃ) সম্মেলনে তা প্রমাণিত হয়েছে। লক্ষ লক্ষ আশেকে রাসূলের এই মিলন মেলা বর্তমান বিশ্বে শান্তি শৃংখলার এক উজ্বল দৃষ্টান্ত। মানুষ হযরত রাসূল (সঃ)-এর শান্তির ধর্ম মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষা অনুশীলন করলে সারা পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তিনি গত ১৬ই ফেব্রুয়ারী শুক্রবার রাজধানী ঢাকার মতিঝিলের আরামবাগস্থ বাবে রহমত দেওয়ানবাগ শরীফে অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক আশেকে রাসূল (সঃ) মাহ্ফিলে সমবেত হাজার হাজার আশেকে রাসূলের উদ্দেশ্যে বাণী মোবারক প্রদান করছিলেন।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা বলেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করি মানুষকে হযরত রাসূল (সঃ)-এর শিক্ষা দেয়ার জন্য। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আমাদের এগারটি দরবার শরীফ ও কয়েকশত খানকাহ্ শরীফ রয়েছে। এসবগুলোতেই ধর্মীয় শিক্ষা দেয়া হয়- কিভাবে একজন মানুষ আত্মশুদ্ধি লাভ করে আদর্শ চরিত্রবান হতে পারে। হযরত রাসূল (সঃ) হেরাগুহায় নির্জনে মোরাকাবা তথা ধ্যান করে আল্লাহকে পেয়েছেন। পৃথিবীতে আগত সমস্ত নবী-রাসূল মোরাকাবা করে আল্লাহকে পেয়েছেন। সুতরাং আমরা যদি আল্লাহকে পেতে চাই, তবে আমাদের মোরাকাবা করতে হবে। মোরাকাবা বিহনে আত্মশুদ্ধি হয় না।
তিনি বলেন, মুসলিম সমাজে কথায় কথায় শিরিক-বিদআত বলতে শুনা যায়। আসলে আল্লাহর সাথে অপর কাউকে শরীক করাকে শিরিক বলে। আমরা নামাজ পড়ি আল্লাহকে সেজদা করার জন্য। কিন্তু নামাজে দাঁড়িয়ে যদি আল্লাহকে ভুলে অন্য কারো কল্পনা করি, আর ঐ অবস্থায় যদি নামাজ আদায় করি, তবে সেটা হবে শিরিক। কারণ আল্লাহ্ হলেন একমাত্র মা’বুদ অর্থাৎ উপাস্য। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্ তায়ালা শিরিক হতে দূরে থাকার জন্য সতর্ক করেছেন।
সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা বলেন, আপনারা নিয়মিত ওয়াজিফার আমল করবেন। আমল না করলে আত্মশুদ্ধি হয় না। আর আত্মশুদ্ধি না হলে তরীকতের নেয়ামত ধরে রাখা যায় না। আমার মোর্শেদ ইমাম শাহ্ চন্দ্রপুরী (রহঃ)-এর দরবার শরীফে অনেক ভক্ত মুরীদান ছিলো। তারা সবাই আমার মোর্শেদের তরীকা গ্রহণ করেছিলেন, তাঁর পবিত্র সোহবত লাভ করেছেন। কিন্তু আমার মোর্শেদের ইন্তেকালের পর তাঁর তরীকা ধরে রাখতে পেরেছে, দেওয়ানবাগ ছাড়া আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। একমাত্র আমরাই ইমাম শাহ্ চন্দ্রপুরী (রহঃ) তরীকা ধরে রাখতে পেরেছি এবং তা প্রচার করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, মানুষের জীবন খুব বেশী দীর্ঘ সময়ের নয়, দেখতে দেখতে আমাদের জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের দরবারে পুরানো জাকের অনেকে মারা গেছেন। এখন আমাদের দরবারে জাকেরের সংখ্যা এত বেশী যে, পুরাতন লোকদের খুঁজে পাওয়া যায় না। যারা আসে, যারা আমার কাছে এসে ডিউটি করে, তাদের অনেককেই আমি চিনি না। কাজেই সময় থাকতেই আমাদের তরীকতের নেয়ামত লাভ করতে হবে। আপনি যদি দুনিয়াতে থাকতেই আল্লাহ্ ও হযরত রাসূল (সঃ)-এর পরিচয় লাভ করতে না পারেন, তবে ঈমান নিয়ে কবরে যাওয়া কঠিন হবে। আপনারা মনোযোগ দিয়ে তরীকার আমল করবেন। কেউ গাফিলতি করবেন না।
সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান শুরু হলে- প্রথমে আশেকে রাসূলদের মোহাম্মদী ইসলামের ওয়াজিফার তালিম দেওয়া হয়। দুপুর সোয়া ১২টায় জু’মার নামাজের আজানের পর মোহাম্মদী ইসলামের মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দেওয়ানবাগ শরীফের সম্মানীত মহাসচিব বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও সম্পাদক ডক্টর সৈয়দ এম. সাঈদুর রহমান আল্-মাহবুবী মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষা ও তাৎপর্যের উপর আলোচনা করেন। অতঃপর বেলা দেড় টায় জু’মার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সূফী সম্রাট হুজুর কেবলা মাহফিলে সমবেত হাজার হাজার আশেকে রাসূলদের উদ্দেশ্যে বাণী মোবারক প্রদান করে মাহফিলের আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন। এরপর তিনি নবাগতদের মোহাম্মদী ইসলামের সবক দেন। মাহফিল শেষে সবাই তাবারুক খেয়ে বিদায় নেন।

No comments: